শফিউল ইসলাম খান: দুপুর গড়াতেই দর্শকদের বাধভাঙ্গা ঢেউ আর বাদ্যের তালে তালে ফুটবলাদের আক্রমণ পাল্টা আক্রমনে ভাসছিলো স্টেডিয়াম। বেলা গড়ালে এখন রৌদ্রে উত্তাপ থাকে না। সন্ধ্যার আব ছায়াও নেমে আসে দ্রুত। থাকে শীতের আমেজ। হেমন্ত এসেছে কুয়াশার আচল উড়িয়ে। এরপর আসবে শীত বসন্ত। ঘড়ির কাটা যখন ৩.৪৩ মিনিট, তখন শুরু হয় ফাইনাল খেলা। শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে দৌড়াতে শুরু করেন বিজয়ী আশাশুনি দলের খেলোয়াড়রা সাথে যোগদেন দলের কর্মকর্তারাও দলকে জয়ী করতে যিনি দৃঢ় প্রত্যায়ে অম্লান ছিলেন তিনি কিংসলে। রোববার সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে ওয়ালটন জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টূর্ণামেন্টের ফাইনাল খেলায় আশাশুনি ২-০ গোলে জয়ী হয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। খেলার ৩৮ মিনিটে আশাশুনির অধিনায়ক ইমরুলের কর্ণার থেকে ১০নং জার্সি পরিহিত কিংসলে এবং ৭০ মিনিটে যোগা দলের পক্ষে গোল দুটি করেন। খেলার শুরুর সাথে সাথে উভয় দলের মধ্যে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমনের ধারা অব্যাহত ছিলো। শুরুতে কালিগঞ্জ আক্রমনে ছিলো তারা ১৩ মিনিটে কর্ণার, ১৫ মিনিটে লিটনের শর্ট, ১৬ মিনিটে দুদুর আক্রমন এবং ২২ মিনিটে জিডোনের শর্ট থেকে গোল করতে ব্যার্থ হয়। একইভাবে আশাশুনি ৪ মিনিটে কিংসলে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়ে ১০ মিনিটে তপুর ক্রসপাস কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা পায়। ১৪ ও ১৮ মিনিটে আশাশুনি দুটি আক্রমণ চালালেও গোলের দেখা পায় ৩৮ ও ৭০ মিনিটে। উভয় দলের মধ্যে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমনে ভাসতে থাকে সাতক্ষীরা স্টেডিয়াম। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত খেলায়া অত্যান্ত সুন্দর ও আকর্ষণীয় হয়েছে বলে মন্তব্য করলেন প্রাক্তন কৃতি খেলোয়াড় আফছার মাস্টার। তিনি বলেন, ফুটবল যে এত জনপ্রিয় মাঠে দর্শকদের উপস্থিতি তা প্রমান। দু দলই ভালো খেলেছে এবং উপভোগ্য খেলা হয়েছে। অখেলায়ারচিত আচরণের জন্য রেফারি সুজিত সরকার চন্দন কালিগঞ্জ দলের লিটন ও আশাশুনি দলের কিংসলে এবং অলবিকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে সাজেক্রীসের সহযোগিতায় মাদককে না বলুন, ফুটবলকে হ্যা বলুন এই শ্লোগানকে সামনে রেখে গত ১৭ নভেম্বর থেকে সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে শুরু হয় ওয়ালটন জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল টূর্ণামেন্ট। ৮ টি দল এই টুর্ণামেন্টে অংশ গ্রহণ করে। দল গুলো হচ্ছে, সাতক্ষীরা সদর, সাতক্ষীরা পৌরসভা, দেবহাটা, কালিগঞ্জ, কলারোয়া, শ্যামনগর, তালা ও আশাশুনি উপজেলা। প্রথম পর্বের খেলায় কালিগঞ্জ ১-০ গোলে কলারোয়ার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর ৩-০ গোলে দেবহাটার বিরুদ্ধে জয়ী হয়ে সেমিতে উঠে। এদিকে শ্যামনগর ৫-০ গোলে তালাকে হারিয়ে ও আশাশুনি ২-০ গোলে সাতক্ষীরা পৌরসভাকে হারিয়ে সেমিতে ওঠে। সেমি ফাইনালে কালিগঞ্জ ২-০ গোলে সাতক্ষীরা সদরকে হারিয়ে এবং আশাশুনি টাইতে শ্যামনগরকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে।
গত ২০১২ সালের এই টুর্ণামেন্টের শ্যামনগর উপজেলা এবং ১১ সালে আশাশুনি উপজেলা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
উদ্বোধনী পর্বে ঋশিল্পির মঞ্জুয়ারার নেতৃত্বে ছাত্র-ছাত্রীরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে। ফাইনাল খেলায় রেফারী ছিলেন সুজিত ব্যনার্জি চন্দন সহকারী রেফারি রফিক, গফফার ও কানন। ম্যাচ কমিশনার বদরুল ইসলাম খান ও হাসনে জাহিদ জজ।
প্রধান অতিথি থেকে চ্যাম্পিয়ন আশাশুনি ও রানার্স আপ কালিগঞ্জ দলের মধ্যে ট্রফি প্রদান করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। খেলা উদ্বোধন করেন, সাতক্ষীরা ২ আসনের নির্বাচিত এমপি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, ওয়ালটনের অতিরিক্ত পরিচালক বিএম ইকবাল বিন আনোয়ার, জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, জগলুল হায়দার এমপি, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, এডিসি সার্বিক ও টুর্ণামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মহসীন আলী, সাজেক্রীস সাধারণ সম্পাদক শেখ নিজাম উদ্দীন, ডিএফ’র সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খানসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেন মাকসুদার রহমান খান চৌধুরী সুজা এবং মিডিয়া পার্টনার এটিএন বাংলা
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS